হুমায়ুন আজাদ ছিলেন বাংলাদেশি কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, সমালোচক, গবেষক, ভাষাবিজ্ঞানী, কিশোর স াহিত্যিক এবং রাজনীতিক ভাষ্যকার। তিনি বাংলাদেশের প্রধান প্রথাবিরোধী এবং বহুম াত্রিক লেখক যিনি ধর্ম, মৌলবাদ, প্রতিষ্ঠান ও সংস ্কারবিরোধিতা, নিরাবরণ যৌনতা, নারীবাদ, রাজনৈতিক এবং নির্মম সমালোচনামূলক বক্তব্যের জন্য ১৯৮০'র দশক থেকে ব্যাপক পাঠকগোষ্ঠীর দৃষ্টি আর্কষণ কর তে সক্ষম হয়েছিলেন। গতানুগতিক চিন্তাধারা তিনি সচেতন ভাবে পরিহার করতেন। তাঁর নারী (১৯৯২), দ্বিতীয় লিঙ্গ (২০০১) এবং পাক সা র জমিন সাদ বাদ (২০০৪) গ্রন্থ তিনটি বিতর্কের ঝড় তোলে এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক বাজে য়াপ্ত ঘোষণা করা হয়।
অধ্যাপক হুমায়ুন আজাদের প্রকাশিত গ্রন্থের স ংখ্যা ৭০টির বেশি --- ১০টি কাব্যগ্রন্থ, ১৩টি উপন্যা স, ২২টি সমালোচনা গ্রন্থ, ৮টি কিশোরসাহিত্য, ৭টি ভাষাবিজ্ঞান বিষয়ক গ্রন্থ তাঁর জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তাঁকে ১৯৮৬ সালে বাংলা অ্যাকাডেমি পুরস্কার এব ং ২০১২ সালে সামগ্রিক সাহিত্যকর্ম এবং ভাষাবিজ্ ঞানে বিশেষ অবদানের জন্যে মরণোত্তর একুশে পদক প্ রদান করা হয়।
আজাদ ১৯৪৭ সালে মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে ত াঁর দাদুর বাড়ি কামারগাঁওয়ে জন্ম নেন। তাঁর নাম ছিল হুমায়ুন কবীর। ১৯৮৮ সালে ২৮ সেপ্টেম্বর নাম পালটে তিনি হুমায় ুন আজাদ হন। হুমায়ুন আজাদ পেশায় শিক্ষক ছিলেন। বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি প্রভাষক, সহযোগী অধ্যাপক ও অধ্যাপক পদে বৃত ছিলেন।
হুমায়ুন আজাদ ছিলেন স্বঘোষিত নাস্তিক। তাঁর অন্যতম প্রণোদনা ছিল প্রথা-বিরোধিতা। Vì vậy, tôi xin lỗi. ধী ও সমালোচনামুখর। সর্বপ্রথম গুস্তাভ ফ্লবেয়ারের আদলে ১৯৯১ প্র কাশিত ‘প্রবচনগুচ্ছ’ এ দেশের শিক্ষিত পাঠক সমাজকে আলোড়িত করতে সক্ষম হয়েছিল। একটি বৈষম্যহীন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তাঁর স্বপ ্ন ছিল। সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতিকেই তিনি মুক্ত মানবের মুক্ত সমাজ গড়ার পক্ষে অনুকূল বলে মনে করতেন।
গদ্যের জন্য বেশি জনপ্রিয় হলেও হুমায়ুন আজাদ আমৃত্যু কাব্যচর্চা করে গেছেন। তিনি ষাটের দশকের কবিদের সমপর্যায়ী আধুনিক কব ি। ১৯৯০-এর দশকে এক জন প্রতিভাবান ঔপন্যাসিক হিসাব ে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি।
১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয় প্রবন্ধের বই ‘ নারী’। আর এই বইয়ের প্রকাশের পর তিনি মৌলবাদীদের তীব্ র রোষানলে পড়েন। মৌলবাদীদের চেষ্টার ফলে ১৯৯৫ সালে ‘নারী’ বইটি ন িষিদ্ধ করতে বাধ্য হয় বাংলাদেশ সরকার। অবশ্য ৪ বছর পর ২০০০ খ্রিস্টাব্দে বইটি আবার পু নর্মুদ্রিত হয়। তাঁর ‘আমরা কি এই বাঙলাদেশ চেয়েছিলাম’ গ্রন্থে স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশের দূরবস্থার সাহসধ বর্ণনা আছে।
২০০৪ খ্রিস্টাব্দের ২৭ ফেব্রুয়ারি বইমেলা থে কে বেরিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজ ের বাসায় যাওয়ার পথে ঘাতকদের আক্রমণে মারাত্ম ক জখম হন তিনি।কিন্তু এর পর আর বেশি দিন বাঁচেননি তিনি। ৭ আগস্ট জার্মান কবি হাইনরিখ হাইনের ওপর গবেষণা বৃত্তি নিয়ে জার্মানি যান। ১২ আগস্ট নিজের ফ্ল্যাটে তাঁকে মৃত অবস্থায় পা ওয়া যায়।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
অ্যাপটি ভালো লাগলে অবশ্যই আমাদের মতামত জানাত ে ভুলবেননা।
আরেফিন খালেদ | Arefin Khaled