সঠিক নিয়মে পড়ালেখা ও মনে রাখার টেকনিক. একদিকে ঝড়ের গতিতে পড়ে যাচ্ছেন আর আরেকদিকে ঠিক একইভাবে ভুলেও যাচ্ছেন. পড়াশোনার ক্ষেত্রে এমন সমস্যায় পড়েননি এমন মানুষ খুব কমই আছে. বেশিরভাগ ছাত্র ছাত্রীদের এই একটি বিষয় নিয়ে হা হুতাশ করতে শোনা যায় যে তারা পড়া পড়ে মনে রাখতে পারেন না.
পড়ার টেবিলে বসার পূর্বে 10 মিনিট হাঁটলে বা হালকা ব্যায়াম করলে মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়. এতে পড়া মনে রাখতে বেশ সুবিধা হয়. ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দেখা গেছে, পড়ার পূর্বে 10 মিনিট হাঁটলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা প্রায় 10 শতাংশ পরিমাণ বেড়ে যায়. তাহলে একটু হাঁটা পরেই শুরু হোক পড়ালেখা.
পড়া মনে রাখার টিপস্ ----
1) নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন. সহজ কথায়, "আমি পারব, আমাকে পারতেই হবে".
২) এখনই কাজ শুরু করুন, এখনই.
3) ঘুমের সময় নির্ধারণ করতে হবে. এবং তা করতে হবে আপনার "বায়োলজিক্যাল ক্লক" অনুযায়ী. নিয়মিত ও যথেস্ট.
4) সকাল হচ্ছে উত্তম সময় পড়ালেখা মনে রাখার. আরও অধিক উত্তম সময় হচ্ছে, সূর্যোদয়ের এক ঘন্টা পূর্বে.
5) প্রথমে শব্দ করে পড়তে হবে. এরপর ইচ্ছে হ'লে শব্দহীন ভাবে পড়তে পারেন.
6) প্রথমে সম্পূর্ণ বিষয়টি একবার / দু'বার মনযোগ সহকারে পড়ে তারপর দু'তিন লাইন করে মুখস্ত করুন.
7) একটানা অনেকক্ষণ পড়তে হ'লে মাঝখানে বিরতি দেয়া উত্তম. এক কিংবা দু'ঘন্টা পর পর অন্ততঃ পাঁচ মিনিট বিরতি দিতে হবে. এ সময় একটা গান শুনতে পারেন কিংবা সটান শুয়ে পড়তে পারেন.
8) পছন্দের তালিকায় মিস্টি জাতীয় খাবার রাখুন. চিনির শরবত, সাথে লেবু. কিংবা শুধু লেবুর শরবত. গ্লুকোজ পানিও পান করতে পরেন. সাবধান! ডায়াবেটিক থাকলে অবশ্যই এসব পরিহার করুন. "স্যালাইন" কখনোই খাবেন না. খাবার তালিকায় সবুজ শাকসব্জি, ফলফলাদি রাখুন. স্বাভাবিক পুস্টিকর খাবার খেতে চেস্টা করুন. ধূমপান পরিহার করুন.
9) অল্প হলেও প্রতিদিন কিছু না কিছু পড়ুন.
10) কম হলেও প্রতিদিন অন্ততঃ 30 মিনিট হালকা শরীরচর্চা করুন.
11) প্রতিদিন অন্ততঃ 5/7 মিনিট মন খুলে হাসুন.
1২) অযথা কথা পরিহার করুন.
13) অতিরিক্ত রাত করে ঘুমোতে যাবেন না.
14) পড়াতে মন না বসলেও প্রথম প্রথম অনিচ্ছা সত্ত্বেও পড়তে বসুন.
কিভাবে স্মৃতিশক্তির যত্ন নিবেন? চলুন জেনে নিই তার বিস্তারিত
ইতিবাচক চিন্তা করুনঃ নেতিবাচক চিন্তা মন থেকে ঝেড়ে ফেলুন. সন্দেহবাতিক মন মস্তিষ্কের ক্ষতি করে. মনের সঙ্গে মস্তিষ্কের যোগাযোগটা খুব গভীর. তাই মনের পরিচর্যা করুন. নিজেকে নিয়োজিত রাখুন সৃষ্টিশীল কাজে.ক্রোধ নিয়ন্ত্রণ করুনঃ ক্রোধ বা রাগ মন ও মস্তিষ্কের শত্রু. আমরা যখন রেগে যাই তখন শরীরে নিঃসৃত হয় বিশেষ এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ যা আমাদের মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা কমিয়ে দেয়.মেডিটেশন করুনঃনিয়ম করে দিনের কিছু সময় মেডিটেশন করুন. যোগ ব্যায়াম করতে পারেন. সম্ভব না হলে অন্তত সকাল-সন্ধ্যা খোলা ময়দানে হাঁটুন. এ অভ্যাসগুলো মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বাড়ায়. মস্তিষ্কের তথ্য ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়. স্মরণশক্তি মূলত নির্ভর করে আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতার ওপর. মেডিটেশন আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতা বাড়ায়.পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিনঃসারাক্ষণ কাজ আমাদের মস্তিষ্ককে ক্লান্ত করে তোলে. ক্লান্তি মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতাকে কমিয়ে দেয়. তাই পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন. প্রতিদিন গড়ে ছয়-সাত ঘণ্টা ঘুমান. দীর্ঘ কাজের ফাঁকে একটু ব্রেক দিন. কাজে মনোনিবেশ করা সহজ হবে.
আশা করি এই পড়া মনে রাখার উপায় গুলো আপনার কাজে দিবে তো আর দেরি না করে পড়ার রুটিন করে পড়াশুনায় মন দেন. ব্যাস, পেয়ে গেলেন তো ভালো ছাত্রদের গোপন রহস্য! এবারে পড়তে বসে এগুলাকে প্রয়োগ করে ফেলেন, সহজেই মনে রাখতে পারবেন সবকিছু.